Post Updated at 20 May, 2023 – 2:55 PM
[আগের লেখাটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন]
তাওয়াফে যিয়ারত
তাওয়াফে যিয়ারত হজের তৃতীয় ফরজ। ১০ জিলহজের ধারাবাহিক তিনটি আমল শেষ করার পর এ তাওয়াফ করা সুন্নত। তবে ১০ তারিখের সুবহে সাদিকের পর থেকেই এ তাওয়াফের সময় শুরু হয়ে যায়। ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত এ তাওয়াফের সময় থাকে।
এ সময়ের মধ্যে যদি কেউ এ তাওয়াফ আদায় না করে, তবুও পরে হলেও তাকে এ তাওয়াফ করতে হবে এবং বিলম্বের কারণে তার ওপর দম ওয়াজিব হবে।
তাওয়াফে যিয়ারতের সময় স্বাভাবিক কাপড়ে থাকলে ইজতেবা করতে হবে না। আর যদি ইহরাম পরিহিত থাকেন, তবে ইজতেবা করতে হবে। সুযোগ হলে প্রথম তিন চক্করে রমল করতে হবে।
এ তাওয়াফ প্রত্যেককে নিজেই করতে হবে। বদলি করানোর সুযোগ নেই। এমনকি বেহুশ হয়ে গেলেও নয়। প্রয়োজন হলে অন্য কেউ করিয়ে দেবে। কিন্তু প্রত্যেককেই এ তাওয়াফ করতে হবে।
হজ ও ওমরা আদায়ের ধারাবাহিক ও বিস্তারিত বর্ণনার লেখাগুলোকে একত্রে পিডিএফ আকারে পড়তে পারেন। PDF ডাউনলোড করতে ক্লিক করুন।
সাঈ
তাওয়াফে যিয়ারতের পর সাঈও করতে হবে। ওমরার তাওয়াফ শেষে যেভাবে সাঈ করেছিলেন, সেভাবেই এখনো সাঈ করুন। কেউ চাইলে হজের ইহরামের পর মিনায় যাওয়ার আগেই একটি নফল তাওয়াফ করে অগ্রীম সাঈ করে নিতে পারেন। তাহলে তাওয়াফে যিয়ারতের পর আর সাঈ করতে হবে না। এমনটি করতে চাইলে সে নফল তাওয়াফেও রমল (যদি সম্ভব হয়) ও ইজতেবা করতে হবে। অবশ্য এ সাঈ তাওয়াফে যিয়ারতের পর করাই ভালো।
মিনায় অবস্থান
মুযদালিফা থেকে আসার পর ১০, ১১ ও ১২ তারিখে মিনায় থাকা সুন্নত। তাওয়াফে যিয়ারতের জন্যে মক্কা গেলে তাওয়াফ শেষে আবার মিনাতেই ফিরে আসুন। বিশেষ করে রাতগুলো মিনাতেই কাটান। তবে কেউ যদি মিনাতে ফিরে না যায়, বরং মক্কার বাসাতেই অবস্থান করে এবং সেখান থেকে গিয়ে পরবর্তী দিনগুলোর পাথর নিক্ষেপ করে আসে, এতে কোনোরূপ জরিমানা বা দম আসবে না, তবে সুন্নতের পরিপন্থী হবে।
১১ ও ১২ তারিখে পাথর নিক্ষেপ
১১ ও ১২ তারিখ জোহরের সময় হওয়ার পর তিনটি জামারাতেই পাথর নিক্ষেপ করতে হবে। পরবর্তী সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত এ পাথর নিক্ষেপের সময় থাকে। মনে রাখতে হবে, এ দুদিন জোহরের সময় হওয়ার আগে কংকর মারার সময় শুরুই হয় না।
এ দুই দিন তিনটি জামারায় ৭টি করে পাথর মারতে হবে। প্রথম দুই জামারায় পাথর মেরে একটু দূরে এসে কিবলামুখী হয়ে হাত তুলে দোয়া করুন। এরপর তৃতীয় জামারায় পাথর মেরে দ্রুত চলে আসুন। এখানে দোয়া করার কোনো কথা নেই।
১১ তারিখে পাথর মেরে তাবুতে ফিরে যান। ১২ তারিখে পাথর মেরে মক্কার বাসায় চলে আসতে পারেন। তবে কেউ চাইলে ১২ তারিখের রাতও মিনায় কাটিয়ে ১৩ তারিখ সুবহে সাদিকের পর কংকর মেরে মক্কায় আসতে পারেন। এটা মুস্তাহাব। অবশ্য মিনায় যদি ১২ তারিখের রাত পেরিয়ে ১৩ তারিখের সুবহে সাদিক হয়ে যায়, তখন ১৩ তারিখের কংকর মারা ওয়াজিব হয়ে যায়। ১২ তারিখে মক্কায় চলে এলেও ১৩ তারিখে গিয়ে পাথর মেরে আসতে পারেন।
বিদায়ী তাওয়াফ
যারা মীকাতের বাইরে থেকে হজ করতে যান, তাদের জন্যে মক্কা থেকে চলে আসার সময় একটি বিদায়ী তাওয়াফ করা ওয়াজিব। তাওয়াফে যিয়ারতের পরই বিদায়ী তাওয়াফের সময় শুরু হয়। তাওয়াফে যিয়ারতের পর কোনো নফল তাওয়াফ করলে তা দ্বারাও বিদায়ী তাওয়াফের ওয়াজিব আদায় হয়ে যাবে। আবার বিদায়ী তাওয়াফের নিয়তে তাওয়াফ আদায় করার পর সুযোগ হলে আরও নফল তাওয়াফ করতেও অসুবিধে নেই।
শেষ কথা
সংক্ষিপ্ত এ পরিসরে সাধারণ কয়েকটি মাসআলা লেখা হলো। আরও বিস্তারিত জানার জন্যে হজের মাসায়েলের ওপর লিখিত বই-পুস্তক এবং সঙ্গে থাকা কোনো অভিজ্ঞ আলেমের শরণাপন্ন হোন। আর বরকতময় এ সফরের কত জায়গায়ই তো দোয়া কবুল হয়। সেসব জায়গায় নিজের এবং পরিবার-পরিজনের দুনিয়া-আখেরাতের সার্বিক কল্যাণের জন্যে দোয়া করুন। দোয়া করার সময় অনুগ্রহ করে অধম এই লেখকের এবং তার পরিবারবর্গের জন্যে, মুসলিমস ডে অ্যাপের এডমিন ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের জন্যে দোয়া করুন—আল্লাহ যেন বারবার পবিত্র সেই ভূমির জিয়ারত নসিব করেন। আল্লাহ দয়াময় আপনার সফর কবুল করুন, বরকতময় করুন, এর পরিপূর্ণ সওয়াব ও বরকত দান করুন। আমীন!
[কিরান ও ইফরাদ হজের নিয়ম জানতে এখানে ক্লিক করুন]
হজ আদায়ের ধারাবাহিক আমলসমূহ (৫) - Muslims Day
May 10, 2023 at 6:25 am[…] লেখাটি পড়তে এখানে ক্লিক […]