Press ESC to close

ওজু-গোসলের পানির বিধান

Post Updated at 29 Feb, 2024 – 10:05 PM

যে পানি দিয়ে ওজু করা যায়

মাসআলা : ওজু করার জন্যে অবশ্যই পবিত্র পানি ব্যবহার করতে হবে। বৃষ্টির পানি, টিউবওয়েলের পানি, সাগর-নদী কিংবা বড় পুকুর ইত্যাদির পানি―এসব পানি সাধারণত পবিত্র। নাপাক কোনো কিছু যদি এগুলোর সঙ্গে মিশ্রিত না থাকে তাহলে এগুলো দিয়ে ওজু করা যাবে। [আদদুররুল মুখতার, ১/৩২৩-৩২৪]

যে পানি দিয়ে ওজু হয় না

মাসআলা : কোনো গাছ পাতা বা ফলের রস, তা যদি পানির মতোও দেখা যায়, তবুও তা দিয়ে ওজু হবে না।

মাসআলা : যদি পানির সঙ্গে কোনো কিছু মেশানোর কারণে এর নাম পাল্টে যায়, যেমন, শরবত বা গোলাপজল ইত্যাদি, তাহলে তা দিয়েও ওজু হবে না। ওজু-গোসলে একবার ব্যবহৃত পানি দিয়েও দ্বিতীয়বার ওজু-গোসল করা যাবে না।

[সূত্র : আদদুররুল মুখতার, ১/৩২৫-৩২৬]

ব্যবহৃত পানির মাসআলা

মাসআলা : ওজু-গোসলের সময় যে পানি শরীর থেকে ঝরে পড়ে, সে পানিকে ‘ব্যবহৃত পানি’ বলা হয়। যদি শরীরে কোনো নাপাকি না থাকে, তবে এ পানি পবিত্র। কিন্তু পবিত্র হলেও এ পানির বিধান সাধারণ পবিত্র পানির মতো নয়। এ পানি দিয়ে আরেকবার ওজু-গোসল করা যাবে না। অনেকে ওজু করার সময় নীচে একটি পাত্র রাখে। হাত-মুখ ধোয়া পানি সেখানে জমা হয়। এরপর সেই পানি দিয়ে পা ধুয়ে নেয়। এমন করলে ওজু হবে না।

মাসআলা : কোনো পাত্র থেকে হাতে করে পানি নিয়ে ওজু করলে সে পাত্রের পানি ব্যবহৃত পানি বলে বিবেচিত হবে না। যে পানি শরীর বা ওজুর অঙ্গ থেকে ঝরে পড়ে, সেটা ব্যবহৃত পানি। [আলমুহীতুল বুরহানী ১/২৮০; খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/১৫; রদ্দুল মুহতার ১/১১২]

মাসআলা : এ ব্যবহৃত পানি পবিত্র। কাপড়ে লাগলে তা নাপাক হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। তা সহই নামাজ পড়া যাবে। তবে যেহেতু তা ব্যবহৃত পানি তাই কাপড়ে যেন অধিক পরিমাণে না লাগে সে দিকে খেয়াল রাখা ভালো। [আদদুররুল মুখতার, ১/২৫১]

মাসআলা : ওজু-গোসলে ব্যবহৃত পানি দিয়ে দ্বিতীয়বার ওজু-গোসল করা যাবে না। তবে তা জীবজন্তুকে খাওয়ানো যাবে, ক্ষেতে-খামারে দেয়া যাবে, নাপাক কাপড়ও ধোয়া যাবে এবং এতে তা পবিত্রও হয়ে যাবে। তবে তা পান করা কিংবা রান্নাবান্নার কাজে ব্যবহার করা মাকরুহ। [বাযযাযিয়া, ৪/১০, কাজীখান, ১/১৬ ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪১; আদ্দুররুল মুখতার ১/৩৫৩; মারাকিল ফালাহ ৮৭]

সাপ্লাইয়ের পানিতে যদি দুর্গন্ধ থাকে

মাসআলা : অনেক সময় আমাদের ওয়াসার সাপ্লাইয়ের পানিতে দুর্গন্ধ থাকে, কখনো রং সামান্য ঘোলাও হয়ে থাকে। তবে পানি সামান্য দুর্গন্ধযুক্ত কিংবা সামান্য ঘোলাটে হলেই এ পানিকে নাপাক বলা যাবে না। ফলে এ পানি দিয়ে ওজু-গোসল করতেও কোনো অসুবিধা নেই। আর যদি তাতে স্পষ্ট নাপাকির কোনো চিহ্ন থাকে, তবে সে পানি নাপাক বলে বিবেচিত হবে। [আলবাহরুর রায়েক, ১/১৮৬; মাসিক আলকাউসার, ফেব্রুয়ারি ২০০৯, প্রশ্ন নং ১৫৫৩]

নদী বা পুকুরের পানির রং ও গন্ধ যদি পাল্টে যায়

মাসআলা : গাছের পাতা, মাটি, পাট ইত্যাদি কোনো পাক বস্তুর মিশ্রণের ফলে যদি নদী বা পুকুরের পানির রং ও গন্ধ পাল্টে যায়, কিন্তু পানির স্বাভাবিক তরলতা অবশিষ্ট থাকে, তবে তা দিয়ে ওজু করা যাবে। আর যদি পানিতে স্পষ্ট নাপাকির কোনো চিহ্ন থাকে, তবে তা নাপাক বলে বিবেচিত হবে।

মাওলানা শিব্বীর আহমদ

উসতাযুল হাদীস, জামিয়াতুল উলুমিল ইসলামিয়া ঢাকা, মোহাম্মদপুর। মাসিক আলকাউসারসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লেখালেখি করেন। তাঁর লিখিত বইও পাঠক মহলে নন্দিত হয়েছে। তিনি মুসলিমস ডে অ্যাপের শরয়ী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

সাইট হিট কাউন্টার

সর্বমোট পোস্ট ভিউ: ২,০১৭,৮৫৭

পোস্ট কপি করার অপশন বন্ধ রাখা হয়েছে। অনুগ্রহ করে পোস্টের লিংক কপি করুন