Post Updated at 4 Sep, 2023 – 5:41 AM

রাতে বা ঘুমাতে যাওয়ার আগের আমলসমূহ

ঘুমাতে যাওয়ার আগে রাসূল (সা) বেশ কিছু আমল করতেন। এই সুন্নাহগুলো পালন করার মাধ্যমে আমরা আমাদের ঘুমকেও ইবাদতের সমতুল্য করে তুলতে পারি। ঘুমানোর আগের সুন্নাহগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।

 

  1. ব্যবহার্য থালা-বাসন, হাড়ি-পাতিল ঢেকে রাখা ও বাতি নিভিয়ে দেয়া
  2. অযু করা
  3. ঘুমের পূর্বে পড়ার জন্য বিশেষ কয়েকটি দুয়া আছে সেগুলো পড়া (যেমনঃ আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া)
  4. সূরা কাফিরুন, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস পড়া
  5. ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়া
  6. আয়াতুল কুরসী পড়া
  7. সূরা বাক্বারার শেষ দুই আয়াত পড়া
  8. সূরা সাজদাহ ও সূরা মুলক পড়া
  9. ডান কাত হয়ে ঘুমানো

ঘুমাতে যাওয়ার আগে পঠিতব্য দুআসমূহ

দুআ ১

بِاسْمِكَ اللّٰهُمَّ أَمُوْتُ وَأَحْيَا

অথবা,

اللّٰهُمَّ بِاسْـمِكَ أَمُوتُ وَأَحْيَا

হে আল্লাহ ! আপনার নাম নিয়েই আমি মারা যাচ্ছি (ঘুমাচ্ছি) এবং আপনার নাম নিয়েই জীবিত (জাগ্রত) হবো।

[সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৩২৪, ৬৩২৫]

দুআ ২

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন তখন তাঁর ডান হাত তাঁর গালের নীচে রাখতেন, তারপর এ দো‘আটি বলতেন:

اللّٰهُمَّ قِنِيْ عَذَابَكَ يَوْمَ تَبْعَثُ عِبَادَكَ

অর্থ: হে আল্লাহ! আমাকে আপনার আযাব থেকে রক্ষা করুন, যেদিন আপনি আপনার বান্দাদেরকে পুনর্জীবিত করবেন।

[সুনানে আবূ দাউদ, নং ৫০৪৫]

দুআ ৩

اللّٰهُمَّ خَلَقْتَ نَفْسِى وَأَنْتَ تَوَفَّاهَا لَكَ مَمَاتُهَا وَمَحْيَاهَا إِنْ أَحْيَيْتَهَا فَاحْفَظْهَا وَإِنْ أَمَتَّهَا فَاغْفِرْ لَهَا اللّٰهُمَّ إِنِّى أَسْأَلُكَ الْعَافِيَةَ 

অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমার আত্মাকে সৃষ্টি করেছেন এবং আপনি তার মৃত্যু ঘটাবেন। তার মৃত্যু ও তার জীবন আপনার মালিকানায়। যদি তাকে বাঁচিয়ে রাখেন তাহলে আপনি তার হেফাযত করুন, আর যদি তার মৃত্যু ঘটান তবে তাকে মাফ করে দিন। হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে নিরাপত্তা চাই।

[সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৭১২]

দুআ ৪

اللّٰهُمَّ رَبَّ السَّمَوَاتِ وَرَبَّ الأَرْضِ وَرَبَّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ رَبَّنَا وَرَبَّ كُلِّ شَىْءٍ فَالِقَ الْحَبِّ وَالنَّوَى وَمُنْزِلَ التَّوْرَاةِ وَالإِنْجِيلِ وَالْفُرْقَانِ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ كُلِّ شَىْءٍ أَنْتَ آخِذٌ بِنَاصِيَتِهِ اللّٰهُمَّ أَنْتَ الأَوَّلُ فَلَيْسَ قَبْلَكَ شَىْءٌ وَأَنْتَ الآخِرُ فَلَيْسَ بَعْدَكَ شَىْءٌ وَأَنْتَ الظَّاهِرُ فَلَيْسَ فَوْقَكَ شَىْءٌ وَأَنْتَ الْبَاطِنُ فَلَيْسَ دُونَكَ شَىْءٌ اقْضِ عَنَّا الدَّيْنَ وَأَغْنِنَا مِنَ الْفَقْرِ 

অর্থ: হে আল্লাহ! হে আকাশসমূহের প্রতিপালক, যমিনের প্রতিপালকو মহান আরশের মালিক, আমাদের প্রতিপালক ও প্রত্যেক বস্তুর প্রতিপালক, হে শস্য-বীজ ও আঁটি বিদীর্ণকারী, হে তাওরাত, ইনজীল ও কুরআন নাযিলকারী, আমি প্রত্যেক এমন বস্তুর অনিষ্ট থেকে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করি, যার (মাথার) অগ্রভাগ আপনি ধরে রেখেছেন (নিয়ন্ত্রণ করছেন)।

হে আল্লাহ! আপনিই প্রথম, আপনার পূর্বে কিছুই ছিল না; আপনি সর্বশেষ, আপনার পরে কোনো কিছু থাকবে না; আপনি সব কিছুর উপরে, আপনার উপরে কিছুই নেই; আপনি সর্বনিকটে, আপনার চেয়ে নিকটবর্তী কিছু নেই, আপনি আমাদের সমস্ত ঋণ পরিশোধ করে দিন এবং আমাদেরকে অভাবগ্রস্ততা থেকে অভাবমুক্ত করুন।

[সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৭১৩]

দুআ ৫

اَلْحَمْدُ لِلّٰهِ الَّذِيْ أَطْعَمَنَا وَسَقَانَا، وَكَفَانَا، وَآوَانَا، فَكَمْ مِمَّنْ لاَ كَافِيَ لَهُ وَلاَ مُؤْوِيَ

অর্থ: সকল প্রশংসা আল্লাহ্‌র জন্য, যিনি আমাদেরকে আহার করিয়েছেন, পান করিয়েছেন, আমাদের প্রয়োজন পূর্ণ করেছেন এবং আমাদেরকে আশ্রয় দিয়েছেন। কেননা, এমন বহু লোক আছে যাদের প্রয়োজনপূর্ণকারী কেউ নেই এবং যাদের আশ্রয়দানকারীও কেউ নেই।

[সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৭১৫]

দুআ ৬

اللّٰهُمَّ فَاطِرَ السَّمَوَاتِ وَالأَرْضِ ، عَالِمَ الْغَيْبِ وَالشَّهَادَةِ ، رَبَّ كُلِّ شَيْءٍ وَمَلِيكَهُ ، أَشْهَدُ أَنْ لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ نَفْسِي ، وَشَرِّ الشَّيْطَانِ وَشِرْكِهِ

অর্থ: হে আল্লাহ! হে আসমানসমূহ ও যমীনের স্রষ্টা, হে দৃশ্য ও অদৃশ্য সকল কিছুর জ্ঞানী, হে সব কিছুর প্রতিপালক ও মালিক! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ছাড়া ইবাদতের উপযুক্ত আর কোনো মাবদু নেই। আমি আপনার কাছে আশ্রয় চাই আমার আত্মার অনিষ্ট থেকে এবং শয়তানের অনিষ্টতা থেকে ও তার শির্ক বা তার ফাঁদ থেকে।

[সুনানে আবূ দাউদ, হাদীস ৫০৬৭]

দুআ ৭

রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “যখন তুমি বিছানায় যাবে তখন বলবে,

اللّٰهُمَّ أَسْلَمْتُ نَفْسِيْ إِلَيْكَ، وَفَوَّضْتُ أَمْرِيْ إِلَيْكَ، وَوَجَّهْتُ وَجْهِيْ إِلَيْكَ، وَأَلْجَأْتُ ظَهْرِيْ إِلَيْكَ، رَغْبَةً وَّرَهْبَةً إِلَيْكَ، لاَ مَلْجَأَ وَلاَ مَنْجَا مِنْكَ إِلاَّ إِلَيْكَ، آمَنْتُ بِكِتَابِكَ الَّذِيْ أَنْزَلْتَ، وَبِنَبِيِّكَ الَّذِيْ أَرْسَلْتَ

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি নিজেকে আপনার কাছে সঁপে দিলাম। আমার যাবতীয় বিষয় আপনার কাছেই সোপর্দ করলাম, আমার চেহারা আপনার দিকেই ফিরালাম, আর আমার পৃষ্ঠদেশকে আপনার দিকেই ন্যস্ত করলাম; আপনার প্রতি অনুরাগী হয়ে এবং আপনার ভয়ে ভীত হয়ে। একমাত্র আপনার নিকট ছাড়া আপনার (পাকড়াও) থেকে বাঁচার কোনো আশ্রয়স্থল নেই এবং কোনো মুক্তির উপায় নেই। আমি ঈমান এনেছি আপনার নাযিলকৃত কিতাবের উপর এবং আপনার প্রেরিত নবীর উপর।”

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যাকে এ দুআটি শিক্ষা দিয়েছেন, তাকে বলেন, যদি এরপর তুমি ঐ রাতে মারা যাও তবে ফিতরাত তথা দ্বীন ইসলামের উপর মারা গেলে।

[সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৩১৩]

দুআ ৮

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: ‘তোমাদের কেউ যখন তার বিছানা ত্যাগ করে, আবার ঘুমাতে ফিরে আসে, তখন সে যেন তার চাদর বা লুঙ্গির আঁচল দিয়ে তিনবার বিছানাটি ঝেড়ে নেয়। কেননা সে জানে না, সে উঠে যাওয়ার পর বিছানায় কোনো কিছু পড়েছে কিনা। তারপর সে যখন শোয়, তখন যেন এ দুআটি বলে,

بِاسْمِكَ رَبِّي وَضَعْتُ جَنْبِي ، وَبِكَ أَرْفَعُهُ ، فَإِنْ أَمْسَكْتَ نَفْسِي فَارْحَمْهَا ، وَإِنْ أَرْسَلْتَهَا فَاحْفَظْهَا بِمَا تَحْفَظُ بِهِ عِبَادَكَ الصَّالِحِينَ

অর্থ: আমার প্রতিপালক! আপনার নামে আমি আমার পার্শ্বদেশ রেখেছি (শুয়েছি) এবং আপনারই নাম নিয়ে আমি তা উঠাবো। যদি আপনি (ঘুমন্ত অবস্থায়) আমার রুহ কবজ করেন তবে আপনি তাকে দয়া করুন। আর যদি আপনি তা ফেরত পাঠিয়ে দেন, তাহলে আপনি তার হেফাযত করুন যেভাবে আপনি আপনার সৎকর্মশীল বান্দাগণকে হেফাযত করে থাকেন।

[জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৪০১]

ঘুম থেকে জেগে পড়ার দুআ

الحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي أَحْيَانَا بَعْدَ مَا أَمَاتَنَا وَإِلَيْهِ النُّشُورُ

অর্থ : সকল প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদেরকে মৃত্যু দেয়ার পর আবার জীবিত করেছেন এবং তাঁর কাছেই পুনরুত্থান হবে। [সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৩২৪]

রাতে বা ঘুমাতে যাওয়ার আগের আমলসমূহ

ঘুমাতে যাওয়ার আগে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বেশ কিছু আমল করতেন। এই সুন্নাহগুলো পালন করার মাধ্যমে আমরা আমাদের ঘুমকেও ইবাদতের সমতুল্য করে তুলতে পারি। ঘুমানোর আগের সুন্নাহগুলো নিচে তুলে ধরা হলো।

ব্যবহার্য থালা-বাসন, হাড়ি-পাতিল ঢেকে রাখা

ব্যবহার্য থালা-বাসন, হাড়ি-পাতিল ঢেকে রাখা। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা যখন ঘুমাবে তখন চেরাগ নিভিয়ে দেবে দরজা বন্ধ করে ফেলবে, মশকের মুখ বন্ধ করে দেবে, খাবার ও পানীয় দ্রব্যাদি ঢেকে রাখবে। [সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৬২৪] 

(এখানে চেরাগ বলে এমন বাতি উদ্দেশ্য, যেগুলো জ্বালিয়ে ঘুমিয়ে পড়লে আগুন লাগার আশঙ্কা থাকে।)

অযু করা

অযু করা। হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন তুমি ঘুমাতে যাবে, এর আগে তুমি অযু করে নাও। এরপর ডান কাতে শুয়ে পড়ো। [সহীহ বুখারী, হাদীস ২৪৭]

ঘুমানোর আগে দুআ পড়া

ঘুমের পূর্বে পড়ার জন্য বিশেষ কয়েকটি দুয়া পোস্টের শুরুতে উল্লেখ রয়েছে। সাধ্য মত সেগুলো পড়া। (যেমনঃ আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমুতু ওয়া আহইয়া)

সূরা কাফিরুন, ইখলাস, ফালাক্ব ও নাস পড়া

সূরা কাফিরুন, সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক্ব ও সূরা নাস পড়া। ফারওয়াহ ইবনু নাওফাল রা. থেকে বর্ণিত, তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে এসে বললেন, “হে আল্লাহ্‌র রাসূল! আমাকে কিছু শিখিয়ে দিন, যা আমি বিছানায় গিয়ে পড়তে পারি।” তিনি বললেন : তুমি সূরা কাফিরূন তিলাওয়াত করো। কারণ তা শিরক থেকে মুক্তির ঘোষণা। [জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৪০৩ ]

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন সাহাবীগণকে বললেন, “তোমরা কি এক রাতে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়তে পার না?“ বিষয়টি সাহাবীদের জন্যে কঠিন মনে হলো। তাই তারা বললেন, “হে আল্লাহর রাসুল! এই কাজ আমাদের মধ্যে কে করতে পারবে?” (অর্থাৎ কেউ পারবে না।) তিনি বললেন, সুরা ইখলাস কুরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান।. (অর্থাৎ এই সুরা পড়লে এক তৃতীয়াংশ কুরআন পড়ার সমান নেকী পাওয়া যাবে)। [সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০১৫]

আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত, নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি রাতে বিছানায় গেলে দুই হাতের তালু একত্রিত করে তাতে ফুঁ দিতেন, এরপর সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়তেন । অতঃপর হাতদ্বয় দ্বারা শরীরের যতদূর পর্যন্ত বুলানো সম্ভব হতো, ততদূর পর্যন্ত বুলিয়ে নিতেন। স্বীয় মাথা, চেহারা এবং শরীরের সামনের দিক থেকে আরম্ভ করতেন। এইভাবে তিনি তিনবার করতেন।’’ [সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০১৭]

৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়া

৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ ও ৩৪ বার আল্লাহু আকবার পড়া। আলী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ফাতিমা রা. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে একটি চাকর চাইলে তিনি বললেন, “আমি তোমাদের দু’জনকে এমন জিনিস শিখিয়ে দিই, যা তোমাদের কাঙ্ক্ষিত (চাকরের) চেয়ে উত্তম? তোমরা যখন বিছানায় শুতে যাবে, তখন ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ, ৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ এবং ৩৪ বার আল্লাহু আকবর পড়বে। এটা তোমাদের চাকরের চেয়েও উত্তম।” [বুখারী, হাদীস ৫৩৬১, ৬৩১৮]

আয়াতুল কুরসি পড়া

আয়াতুল কুরসি পড়া। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যখন বিছানায় ঘুমাতে যাবে আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার উপর সব সময় একজন হেফাযতকারী নিযুক্ত থাকবে এবং ভোর পর্যন্ত শয়তান তোমার ধারে কাছেও আসতে পারবে না।” [সহীহ বুখারী, হাদীস ২৩১১]

اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَيُّ الْقَيُّومُ لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَلاَ نَوْمٌ لَهُ مَا فِي السَّمَاوَاتِ وَمَا فِي الأَرْضِ مَنْ ذَا الَّذِي يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيطُونَ بِشَيْءٍ مِنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَاءَ وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاواتِ وَالأَرْضَ وَلاَ يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَهُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيمُ

অর্থ: আল্লাহ্, তিনি ছাড়া কোনো সত্য ইলাহ্ নেই। তিনি চিরঞ্জীব, সর্বসত্তার ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না, নিদ্রাও নয়। আসমানসমূহে যা রয়েছে ও যমীনে যা রয়েছে সবই তাঁর। কে সে, যে তাঁর অনুমতি ব্যতীত তাঁর কাছে সুপারিশ করবে? তাদের সামনে ও পিছনে যা কিছু আছে তা তিনি জানেন। আর যা তিনি ইচ্ছে করেন তা ছাড়া তাঁর জ্ঞানের কোনো কিছুকেই তারা পরিবেষ্টন করতে পারে না। তাঁর ‘কুরসী’ আসমানসমূহ ও যমীনকে পরিব্যাপ্ত করে আছে; আর এ দুটোর রক্ষণাবেক্ষণ তাঁর জন্য বোঝা হয় না। আর তিনি সুউচ্চ সুমহান।

[সূরা বাকারা ২৫৫]

সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়া

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি রাতের বেলা সুরা বাকারার শেষ দুই আয়াত পড়বে সেটা তার জন্য যথেষ্ঠ হবে।

[সহীহ বুখারী, হাদীস ৫০০৯, সহীহ মুসলিম, হাদীস ৮০৭]

বিখ্যাত হাদীসগ্রন্থ “রিয়াযুস সালেহীন” এর লেখক ও সহীহ মুসলিমের ভাষ্যকার, ইমাম আন-নববী রহ. বলেন, “এর অর্থ কেউ বলেছেন, কিয়ামুল লাইল বা তাহাজ্জুদ নামাযের জন্য যথেষ্ঠ হবে। কেউ বলেছেন, শয়তানের ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য যথেষ্ঠ হবে। কেউ বলেছেন, বালা-মুসিবত থেকে নিরাপত্তা পাওয়া যাবে। তবে সবগুলো অর্থই সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত : 

اٰمَنَ الرَّسُوْلُ بِمَاۤ اُنْزِلَ اِلَیْهِ مِنْ رَّبِّهٖ وَ الْمُؤْمِنُوْنَ ؕ كُلٌّ اٰمَنَ بِاللّٰهِ وَ مَلٰٓىِٕكَتِهٖ وَ كُتُبِهٖ وَ رُسُلِهٖ ۫ لَا نُفَرِّقُ بَیْنَ اَحَدٍ مِّنْ رُّسُلِهٖ ۫ وَ قَالُوْا سَمِعْنَا وَ اَطَعْنَا ؗۗ غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَ اِلَیْكَ الْمَصِیْرُ ۝۲۸۵ لَا یُكَلِّفُ اللّٰهُ نَفْسًا اِلَّا وُسْعَهَا ؕ لَهَا مَا كَسَبَتْ وَ عَلَیْهَا مَا اكْتَسَبَتْ ؕ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذْنَاۤ اِنْ نَّسِیْنَاۤ اَوْ اَخْطَاْنَا ۚ رَبَّنَا وَ لَا تَحْمِلْ عَلَیْنَاۤ اِصْرًا كَمَا حَمَلْتَهٗ عَلَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِنَا ۚ رَبَّنَا وَ لَا تُحَمِّلْنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهٖ ۚ وَ اعْفُ عَنَّا ۥ وَ اغْفِرْ لَنَا ۥ وَ ارْحَمْنَا ۥ اَنْتَ مَوْلٰىنَا فَانْصُرْنَا عَلَی الْقَوْمِ الْكٰفِرِیْنَ۠ ۝۲۸۶

অর্থ: রাসূল তার প্রভুর পক্ষ থেকে যা তার কাছে নাযিল করা হয়েছে তার উপর ঈমান এনেছেন এবং মুমিনগণও। প্রত্যেকেই ঈমান এনেছে আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাগণ, তাঁর কিতাবসমূহ এবং তাঁর রাসূলগণের উপর। (তারা বলে,) আমরা তাঁর রাসূলগণের কারও মধ্যে তারতম্য করি না। আর তারা বলে, আমরা (আল্লাহর ও রাসূলের বিধানসমূহ মনোযোগ সহকারে) শুনেছি ও মেনে নিয়েছি। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনার ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং আপনার দিকেই প্রত্যাবর্তনস্থল।

আল্লাহ্ কারো উপর এমন কোন দায়িত্ব চাপিয়ে দেন না যা তার সাধ্যাতীত। সে ভালো যা উপার্জন করে তার প্রতিফল তারই, আর মন্দ যা কামাই করে তার প্রতিফলও তার উপরই বর্তায়। (হে মুসলিমগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে এ দুআ করো যে,) ‘হে আমাদের প্রতিপালক! যদি আমরা বিস্মৃত হই অথবা ভুল করি তবে আপনি আমাদেরকে পাকড়াও করবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের পূর্ববর্তীগণের উপর যেমন দায়িত্বভার অর্পণ করেছিলেন আমাদের উপর তেমন কিছু অর্পণ করবেন না। হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদেরকে এমন ভার চাপিয়ে দেবেন না, যার সামর্থ আমাদের নেই। আর আপনি আমাদের পাপ মোচন করুন, আমাদেরকে ক্ষমা করুন, আমাদের প্রতি দয়া করুন, আপনিই আমাদের অভিভাবক। অতএব কাফির সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সাহায্য করুন।

[সূরা বাকারা ২৮৫-২৮৬]

সূরা সাজদাহ ও সূরা মুলক তিলাওয়াত করা

এটি রাতের আমল: সূরা সাজদাহ ও সূরা মুলক পড়া। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সুরা আস-সাজদা ও সুরা মুলক তেলাওয়াত না করে কোনো দিন ঘুমাতেন না। [জামে তিরমিযী, হাদীস ২৮৯২]

ডান কাত হয়ে ঘুমানো

হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ডান কাতে ঘুমাতেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৩১৫]

Comments
  1. شكرا جزاك الله خير

  2. এখন কি প্রতি দিন হাদীস এর নোটিফিকেশন যাই সবার কাছে। আমার কাছে প্রতি দিন আসে না কেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

- আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

সাম্প্রতিক পোস্ট সমূহ
ক্যাটাগরি সমূহ
ট্যাগ সমূহ
error: অনুগ্রহ করে লেখাটি কপি করবেন না। লিংক শেয়ার করুন। ধন্যবাদ