Post Updated at 27 May, 2024 – 7:52 AM
কুরবানি কতদিন করা যায়
মোট তিনদিন কুরবানি করা যায়—১০, ১১ ও ১২ জিলহজ অর্থাৎ ঈদের দিন, এর পরের দিন এবং এর পরবর্তী দিনের সূর্যাস্ত পর্যন্ত। তবে সম্ভব হলে জিলহজের ১০ তারিখেই কুরবানি করা উত্তম। সাধারণত এ তারিখেই অধিকাংশ কুরবানি হয়ে থাকে। এ দিনকে হাদীস শরীফে ‘ইয়াউমুন নাহর’ বা কুরবানির দিন বলা হয়েছে। [সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৫৫০]
কুরবানির সময় কখন শুরু হয়
প্রত্যেক মহল্লার ঈদের নামাজের পর থেকে কুরবানির সময় শুরু হয়। অর্থাৎ নিজ মহল্লার ঈদের নামাজের পূর্বে কুরবানি করা যাবে না। ঈদের নামাজের আগে যদি কেউ কুরবানির পশু জবাই করে, তবে সে পশুর গোশতা খাওয়া যাবে, কিন্তু তা দিয়ে কুরবানি আদায় হবে না। হাদীস শরীফে আছে, বারা ইবনে আযিব রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ঈদুল আযহার দিন নামাজের পর আমাদের উদ্দেশ্যে খুতবা দান করেন। খুতবায় বলেন : যে আমাদের মতো নামাজ আদায় করল এবং আমাদের মতো কুরবানি করল, সে কুরবানির রীতিনীতি যথাযথ পালন করল। আর যে নামাজের আগে কুরবানি করল তা নামাযের আগে হয়ে গেল, এতে তার কুরবানি হবে না। [সহীহ বুখারী, হাদীস ৯৫৫]
অবশ্য যদি বৃষ্টি-বাদলের কারণে ১০ জিলহজ ঈদের নামাজ পড়া সম্ভব না হয়, তাহলে নামাজের সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর (অর্থাৎ সূর্য ঢলে পড়ার পর) কুরবানি করা যাবে।
কুরবানিদাতার ঈদের নামাজের আগে যদি কুরবানি হয়
কুরবানির সময় শুরু হয় ১০ জিলহজ ঈদের নামাজের পর থেকে। কোনো মহল্লায় যখন ঈদের নামাজ আদায় করা হয়ে যায়, তখন সে মহল্লার যে কেউ কুরবানি করতে পারে। এ জন্য কুরবানিদাতার ঈদের নামাজ আদায় করা শর্ত নয়। তিনি যদি তখনো ঈদের নামাজ না পড়ে থাকেন, কিংবা তিনি প্রথম জামাতে শরিক হতে পারেননি, দ্বিতীয় জামাতে শরিক হবেন, অথবা তিনি কোনো ওজরের কারণে ঈদের জামাতে শরিকই হতে পারবেন না, অথবা যদি তিনি নারী হন, তাহলে এসব পরিস্থিতিতে কুরবানিদাতার ঈদের নামাজ ছাড়াই তার কুরবানির পশু জবাই করাতে কোনো অসুবিধা নেই।
এর বিপরীতে কুরবানিদাতা যদি ভিন্ন কোনো মহল্লা থেকে ঈদের নামাজ আদায় করে এসে থাকেন, কিন্তু তখনো তার মহল্লায় ঈদের নামাজ আদায় হয়নি, তবে তিনি এ মহল্লাতে কুরবানির পশু জবাই করতে পারবেন না, যতক্ষণ না এখানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।[ফাতাওয়া আলমগীরী, ৫/২৯৬]
রাতে কুরবানি করা
কুরবানি দিনে করাই উত্তম। তবে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা থাকলে রাতে করলেও কোনো অসুবিধা নেই। মনে রাখতে হবে, ১০ ও ১১ তারিখ দিবাগত রাতে কুরবানি করা যাবে, কিন্তু ১২ তারিখ দিবাগত রাতে আর কুরবানি করা যাবে না। ১২ তারিখের সূর্যাস্তের মধ্য দিয়েই কুরবানির সময় শেষ হয়ে যায়।
নির্ধারিত দিনগুলোতে কেউ কুরবানি করতে না পারলে
যার ওপর কুরবানি ওয়াজিব সে যদি কুরবানির নির্ধারিত দিনগুলোতে কুরবানি করতে না পারে, তাহলে কুরবানির পশু না কিনে থাকলে কুরবানির উপযুক্ত একটি পশুর মূল্য সদকা করতে হবে। আর যদি কুরবানির উদ্দেশ্যে পশু কেনা থাকে, তাহলে সেই পশু জীবিত সদকা করতে হবে।
পেছনের বছরের কুরবানি
কেউ যদি পেছনের অনাদায়কৃত কোনো কুরবানি আদায় করতে চায়, তাহলে তাকে পশুর মূল্য সদকা করতে হবে। অনেকে মনে করেন, বিগত বছরের অনাদায়কৃত কুরবানি এ বছর করে নিলেও হবে এবং এর গোশতও স্বাভাবিক কুরবানির গোশতের মতো খাওয়া যাবে। না, এটা ভুল ধারণা। সময়মতো যদি কেউ ওয়াজিব কুরবানি আদায় করতে না পারে, তাহলে তাকে পশুর মূল্য কিংবা জীবিত পশুই সদকা করতে হবে। এ পশু জবাই করে নিজেরা খাওয়া যাবে না।