Post Updated at 20 Feb, 2024 – 11:44 PM

পবিত্র কুরআনে আল্লাহর পরিচয়

পবিত্র কুরআনে কারীম আল্লাহ তাআলার কালাম। শেষ নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর নাযিল হওয়া এ কুরআন মানবজাতির হেদায়েতের জন্যে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে আগত সর্বশেষ আসমানী গ্রন্থ। অকাট্য শ্বাশ্বত এ গ্রন্থের পুরোটা জুড়েই ছড়িয়ে আছে মানবজাতির হেদায়েতের পয়গাম। আসমানী এ হেদায়েত ও পথনির্দেশনা কখনো আদেশ-উপদেশের সুরেকখনো ঘটনা বর্ণনার মধ্য দিয়ে কিংবা অন্য কোনো আঙ্গিকে বিবৃত হয়েছে। হেদায়েতের একটি বড় দিকবলা যায়- সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ দিকআল্লাহ তাআলার পরিচয় লাভ। আল্লাহ তাআলার প্রতি ঈমান- এর ওপরই নির্ভর করে একজন মুমিনের অন্য সকল বিষয়। এ ঈমানের জন্যে প্রয়োজন পরিচয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা নিজেই নিজের কিছু পরিচয় উল্লেখ করেছেন। এ পরিচয়ের বিবরণ এতটাই সরল ও সাদামাটাযা পড়াশোনার আলোবঞ্চিত একজন অতি সাধারণ মানুষও খুব সহজেই বুঝতে পারে। আবার এ বিবরণ এতটাই গভীরযা একজন উচ্চশিক্ষিত গবেষক ব্যক্তিকে ভাবনায় বিভোর রাখতে পারে বছরের পর বছর। বিবরণের এ মোজেযা অবশ্য পুরো কুরআনেই ছড়িয়ে আছে।

 

রব্বুল আলামীন : আল্লাহ তাআলার প্রথম পরিচয়

পবিত্র কুরআনের সর্বপ্রথম বাক্যটিতেই বর্ণিত হয়েছে আল্লাহ তাআলার একটি পরিচয়- তিনি রব্বুল আলামীন। রব অর্থ প্রতিপালক। যিনি প্রতিটি মুহূর্তে প্রয়োজনীয় সবকিছুর ব্যবস্থা করে দেনতিনিই রব’, তিনিই প্রতিপালক। আর রব্বুল আলামীন তিনিযিনি সমগ্র সৃষ্টিজগতের প্রতিপালক। জগৎজুড়ে যত কিছু রয়েছেযত কাল ধরে রয়েছেযত কাল ধরে থাকবেযত জায়গা জুড়ে রয়েছেতিনি সবকিছুরই প্রতিপালক। আমরা যারা পৃথিবীতে বেঁচে আছিস্থূল দৃষ্টিতে আমরা নানা জিনিস দেখি। নিজেদের বাইরে গাছপালা পশুপাখি পাহাড়পর্বত নদীনালা কীটপতঙ্গ আকাশজমিন চাঁদ সূর্য ইত্যাদি কত কিছু দেখি! একেকটি প্রজাতির মধ্যে কত বৈচিত্র্য! এক মানুষেরই কত ধরন! নারী-পুরুষশিশু-যুবক-বৃদ্ধসাদা-কালোলম্বা-খাটোচিকন-মোটাধনী-গরীবউঁচু বংশীয় আর নিচু বংশীয়শিক্ষিত-অশিক্ষিতশাসক-শাসিত- বৈচিত্র্যের আরও কত দিক! একেকজনের প্রয়োজন একেকরকম। চাহিদা সবার একরকম নয়। কিন্তু যিনি রব ও প্রতিপালকতিনি যেমন বৈচিত্র্যপূর্ণ এ মানবজাতি সৃষ্টি করেছেনমানবজাতির এ বিচিত্রতাও তাঁরই সৃষ্টি। জগতের শৃঙ্খলা ও সৌন্দর্যবিধানের জন্যে এ বিচিত্রতা অবধারিতও ছিল। বৈচিত্র্য সৃষ্টি করে তিনিই জানিয়ে দিয়েছেন-

نَحْنُ قَسَمْنَا بَیْنَهُمْ مَّعِیْشَتَهُمْ فِی الْحَیٰوةِ الدُّنْیَا وَ رَفَعْنَا بَعْضَهُمْ فَوْقَ بَعْضٍ دَرَجٰتٍ لِّیَتَّخِذَ بَعْضُهُمْ بَعْضًا سُخْرِیًّا

আমিই পার্থিব জীবনে তাদের মধ্যে তাদের জীবিকা বণ্টন করি এবং একজনকে অপরের ওপর মর্যাদায় উন্নীত করিযেন একজন আরেকজনকে দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে পারে। -সূরা যুখরুফ (৪৩) : ৩২

আল্লাহর রবুবিয়্যাতের সীমা : কল্পনাও যার অসম্ভব

কথা হলোমহান আল্লাহ মানবজাতির এ বৈচিত্র্য  রক্ষা করেই সকলের চাহিদা পূরণ করে চলছেন। সৃষ্টির সূচনা থেকেই তিনি মিটিয়ে যাচ্ছেন বিচিত্র মানুষের বিচিত্র চাহিদা। এখনো মেটাচ্ছেন। মেটাবেন আগামী দিনেওযতদিন পৃথিবী টিকে থাকে ততদিন এবং পরকালেও। সেখানেও তো তিনিই রবতিনিই প্রতিপালক। পৃথিবীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত কত মানুষ জন্ম নিয়েছে এর প্রকৃত হিসাব কি কারও পক্ষে করা সম্ভবআর কত মানুষ জন্ম নেবে ভবিষ্যতেএর কল্পনাও তো কারও পক্ষে সম্ভব নয়। আগে-পরের সব হিসাব একমাত্র আল্লাহ তাআলার কাছেই আছে। প্রতিটি মানুষের জন্মজন্মের পর নানা বয়সের নানা ধাপ পেরিয়ে অবশেষে মৃত্যু- সবকিছুর হিসাবই তাঁর কাছে রয়েছে। শুধুই কি হিসাববরং এ সব তো তিনিই নিয়ন্ত্রণ করেন। এভাবে জগতের এক দুর্বল ও ক্ষুদ্র সদস্য মানুষকে নিয়ে ভাবতে থাকলেও আল্লাহ তাআলার রবুবিয়্যাত ও প্রতিপালন গুণের সীমা-পরিসীমার কল্পনায় অক্ষমতা স্বীকার করতে হয় আমাদের। পাশাপাশি অকপটে স্বীকার করতে হয় তাঁর কুদরত শক্তি ও প্রতিপালনের অসীমতাকে। তিনিই আমাদের রবতিনি রব্বুল আলামীন।

এ তো গেল এক মানুষের কথা। এর বাইরে আরও কত শত সহস্র প্রজাতি ছড়িয়ে আছে আমাদের চারপাশে। অনেক কিছু আমরা দেখি। খোলা চোখে দেখি। প্রাণীজগৎ নিয়ে যাদের গবেষণাতারা যান্ত্রিক চোখে দেখেন আরও অনেক কিছু। আল্লাহ তাআলা সেসব প্রাণীরও রবপ্রতিপালক। সেগুলোকে তিনি সৃষ্টি করেন। মানুষের মতোই সেসব প্রাণীরও খাদ্যের প্রয়োজন হয়। মানুষের মতো ওসবের জীবনেও রয়েছে নানান ধাপ- বাচ্চা থেকে বয়স্ক হওয়া পর্যন্ত। ওদের কোনোটা থাকে মানুষের অধীন হয়ে। সেসবকে আমরা গৃহপালিত পশু বা পাখি বলে থাকি। গৃহপালিত পশুপাখির খাদ্য আবাস চিকিৎসা-এসব বাহ্যত মানুষই ব্যবস্থা করে থাকে। কিন্তু হাতে গোনা কয়েকটি প্রাণী- হাস-মুরগি আর গরু-ছাগলের বাইরে রয়ে গেছে বিশাল প্রাণীজগৎ। সেসব মানুষের অধীন নয়। ওগুলোর বেঁচে থাকার কোনো উপকরণের ব্যবস্থা করার দায়িত্বও মানুষের নয়। কথা হলএ ব্যবস্থাপনা কার দায়িত্বেকার কাঁধে অর্পিত প্রাণীকুলের জীবিকা সরবরাহের দায়িত্বকে নিয়েছেন আশরাফুল মাখলুকাত মানুষ থেকে শুরু করে তুচ্ছ কীটপতঙ্গ পর্যন্ত সকল প্রাণীর সকল প্রয়োজন মেটানোর ভারএ নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই- মহান আল্লাহ তাআলাই এসবের ব্যবস্থা করে থাকেন। তিনি একাই করেন। জগতের পরিচালনাজগতের সকলের এবং সবকিছুর প্রতিপালনে তাঁর কোনো শরীক নেইযেমন শরীক নেই তাঁর মাবুদ হওয়ার ক্ষেত্রেও। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহর ঘোষণা লক্ষ করুন-

وَ مَا مِنْ دَآبَّةٍ فِی الْاَرْضِ اِلَّا عَلَی اللّٰهِ رِزْقُهَا وَ یَعْلَمُ مُسْتَقَرَّهَا وَ مُسْتَوْدَعَهَا

ভূপৃষ্ঠে বিচরণকারী সকলের জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহরই। তিনি সকলের স্থায়ী ও অস্থায়ী অবস্থিতি সম্পর্কে অবহিত। -সূরা হূদ (১১) : ৬

আল্লাহ তাআলাই জানেনজগতে কত প্রজাতির প্রাণী রয়েছেকোন্ প্রজাতির কত শত-সহস্র সদস্য রয়েছেস্বাভাবিক কথাযিনি রব ও প্রতিপালকযিনি সৃষ্টি করেনযিনি সৃষ্টির পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যখন যা প্রয়োজন হয়সবকিছু সরবরাহ করেনতিনি-ই তো জানবেন। শুধুই জানেনএমনও নয়। বরং সবকিছু তিনিই নিয়ন্ত্রণ করেন। মানুষ ও অন্য সকল জীব- প্রতিটি প্রজাতির সদস্য কত হবেকার জীবন কত দিনের হবেজন্ম-মৃত্যু কার কবে হবে- এর জ্ঞান ও নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণই এককভাবে তাঁর হাতে। তিনিই লিখে দিয়েছেন সবকিছু-

كُلٌّ فِیْ كِتٰبٍ مُّبِیْنٍ.

সবকিছুই এক সুস্পষ্ট কিতাবে রয়েছে। -সূরা হূদ (১১) : ৬

মানুষ বলি আর পশুপাখি-কীটপতঙ্গসবই তো প্রাণী। এ প্রাণীকুলের বাইরে আরও যত জগৎআরও যত বিচিত্র সৃষ্টিআল্লাহ তাআলা সেসবেরও প্রতিপালক। আর কেবল খাদ্যই নয়বরং জীবনের যত প্রয়োজনসবকিছুরই ব্যবস্থাপক তিনিএকমাত্রই তিনি। তিনি যেমন রিযিকের ব্যবস্থা করেনতিনি তেমন সুস্থতাও দান করেন। বিপদাপদে তিনিই সাহায্য করেন। ধনসম্পদ বিদ্যাবুদ্ধি প্রভাব-প্রতিপত্তি যশখ্যাতি- সবকিছু তিনিই দিয়ে থাকেন। পথহারা মানুষকে তিনিই পথ দেখিয়ে থাকেন। তাঁর এ প্রতিপালন যে কত বৈচিত্র্যময়এর কিছুটা নমুনা বর্ণিত হয়েছে পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে। কুরআনের এ বর্ণনাও আমাদেরকে কল্যাণের পথ দেখায়। আবার কল্যাণের পথ দেখানোসত্যের পথে পরিচালনা- এও তো রবুবিয়্যাতেরই অংশ।

রব নিয়ে বিতর্ক : এক পক্ষে মূসা আলাইহিস সালাম, আরেক পক্ষে ফেরাউন

রব্বুল আলামীন’-এর পরিচয় নবী মূসা আলাইহিস সালাম তুলে ধরেছিলেন ফেরাউনের সামনে। ফেরাউন নিজেকে খোদা বলে দাবি করে বসেছিল। তার কথা ছিল-

اَنَا رَبُّكُمُ الْاَعْلٰی.

আমি তোমাদের সবচেয়ে বড় রব! -সূরা নাযিআত (৭৯) : ২৪

ফেরাউন ছিল প্রতাপশালী বাদশাহ। জ্যোতিষীদের কথায় বনী ইসরাইলের অসংখ্য নিষ্পাপ ছেলেসন্তানকে সে হত্যা করেছিল। তাকে ঠেকায় কেমূসা আলাইহিস সালাম যখন তাকে ঈমানের দাওয়াত দিলেনদম্ভভরে সে বলেছিল-

لَىِٕنِ اتَّخَذْتَ اِلٰهًا غَیْرِیْ لَاَجْعَلَنَّكَ مِنَ الْمَسْجُوْنِیْنَ.

তুমি যদি আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে মাবুদরূপে গ্রহণ করতবে আমি অবশ্যই তোমাকে জেলে ঢুকাব! -সূরা শুআরা (২৬) : ২৯

ফেরাউনের সঙ্গে হযরত মূসা আলাইহিস সালামের কথোপকথনের বর্ণনা পবিত্র কুরআনে স্বয়ং আল্লাহ তাআলাই উল্লেখ করেছেন। রব্বুল আলামীন’-এর পক্ষ থেকে দ্বীনের দাওয়াত নিয়ে গেলে ফেরাউন তাঁকে বলল-

وَ مَا رَبُّ الْعٰلَمِیْنَ.

রব্বুল আলামীন আবার কী? –সূরা শুআরা (২৬) : ২৩

মূসা আলাইহিস সালাম উত্তর দিলেন : আকাশসমূহ পৃথিবী আর এ দুয়ের মাঝে যা কিছু রয়েছে সবকিছুর রব ও প্রতিপালক যিনি। এরপর বললেন : তিনি তোমাদেরও রবতোমাদের পূর্বপুরুষদেরও রব। শেষে বললেন : তিনি পূর্ব-পশ্চিম আর এ দুয়ের মাঝে যত কিছু আছেসবকিছুর রব।

জগতের কী আর বাকি থাকলআল্লাহ তাআলার রবুবিয়্যাত স্থান-কাল-পাত্র- সব বিবেচনাতেই সর্বব্যাপী। আকাশ-জমিন সবকিছুর তিনি রব। তিনি এ কালেরও রবঅতীত কালেরও রব। ভবিষ্যতেরও তিনিই রব। পূর্ব-পশ্চিম আর আকাশ-জমিনের মধ্যকার অস্তিত্বশীল যত বস্তুতা নিষ্প্রাণ জড় পদার্থ হোককিংবা কোনো প্রাণীতিনি সবকিছুরই রব।

যিনি রব, তিনিই হেদায়েত দিয়ে থাকেন

এ দুনিয়াতে মানুষের বসবাস অল্প কদিনের। দুনিয়া নিজেই যেহেতু ক্ষণস্থায়ীদুনিয়ার সবকিছুই তাই ক্ষণস্থায়ী। কিন্তু মানুষের জন্যে এ জীবনটাই একমাত্র জীবন নয়। এ জীবনের পর রয়েছে অনন্ত অসীম জীবনপরকালের জীবন। অন্তহীন সে জীবনের ভালোমন্দ সুখ-দুঃখ সবই নির্ভর করে এ জীবনের আমলের ওপর। এ ক্ষণস্থায়ী জীবনের আমলের ফলই মানুষ ভোগ করবে চিরস্থায়ী পরকালে। আল্লাহ তাআলা যেহেতু মানুষের রব ও প্রতিপালকতিনি তার সবরকম প্রয়োজনই পূরণ করছেন। জাগতিক চাহিদা যেমন পূরণ করছেনঅন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান-শিক্ষা-চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেনতেমনি তিনি পরকালের সুখী জীবনের পথও নির্দেশ করেছেন। কোন পথটি ভালো আর কোনটি মন্দকোনটি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনে সহায়ক আর কোনটি আল্লাহর অসন্তুষ্টি নিয়ে আসে- এসব তিনি দিনের আলোর মতোই স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন মানুষকে। ভালো-মন্দ আর হক-বাতিলের মাঝে সুস্পষ্ট বিভেদরেখা এঁকে দেয়ার জন্যে তিনি পাঠিয়েছেন হাজারো নবী-রাসূল। তাঁদের অনেককে দিয়েছেন তাঁর কালাম- আসমানী কিতাব। মানুষের হেদায়েতের জন্যে নবী-রাসূল হিসেবে তিনি মানুষকেই পাঠিয়েছেন। নবী-রাসূলগণ নিজ নিজ জাতিকে হাতে-কলমে দেখিয়ে দিয়েছেন- কীভাবে আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করতে হয়। উম্মতের হাতে ধরে দেখিয়ে দিয়েছেন হেদায়েতের সরল পথ। নিজেরা আমল করে শিখিয়েছেন কীভাবে আল্লাহ তাআলার কিতাব মেনে চলতে হয়।

নবী-রাসূল হিসেবে ফিরিশতা না পাঠিয়ে আল্লাহ তাআলা মানুষ পাঠিয়েছেনযেন মানুষেরা সহজেই এ হেদায়েত গ্রহণ করতে পারে। যেন এ আপত্তি কেউ তুলতে না পারে- নূরের ফিরিশতারা তো আর মাটির মানুষের চাহিদা ও সমস্যা অনুধাবন করতে পারে না! তাই দুনিয়ার নানা ঝামেলা মিটিয়ে আমরা তাদের কথা মানব কী করে!’ আসমানী কিতাবগুলো নবীদের মাধ্যমেই পৌঁছিয়েছেন মানুষের কাছে। এভাবেই আল্লাহ তাআলা স্বীয় বান্দাদের পরকালীন মুক্তির ব্যবস্থা করেছেন। মানুষ পেয়েছে পরকালের সন্ধানপেয়েছে মহান আল্লাহর পরিচয়। আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মানুষের হেদায়েতের জন্যে প্রেরিত এ দুটি ধারাও তাই তাঁর রবুবিয়্যাতেরই প্রকাশ।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা মানুষকে দুআ করতেও শিখিয়েছেন। তাঁর কাছে কী চাইতে হবেকীভাবে চাইতে হবেকোন্ শব্দে চাইতে হবে- তিনি এসব শিখিয়ে দিয়েছেন। সেসব দুআর মধ্যে নিরেট জাগতিক চাওয়া যেমন রয়েছেরয়েছে পরকালের নাজাতের প্রার্থনাও। গোনাহ ক্ষমা করে দেয়ার আর্জিহেদায়েতের পথে অবিচলতাচোখজুড়ানো স্ত্রী-সন্তানের কামনাদুনিয়া ও আখেরাতের ব্যাপক কল্যাণ- কত কিছুই চাওয়া যায় সেসব দুআয়! বলার বিষয় হলপবিত্র কুরআনে বর্ণিত এসব দোয়ার প্রায় প্রতিটিতেই আল্লাহকে ডাকা হয়েছে এ রব’ শব্দটি দিয়েই। কোথাও ربنا অর্থাৎ হে আমাদের প্রতিপালক,  আবার কোথাও ربِّ অর্থাৎ হে আমার রব। স্বাভাবিক কথাযিনি প্রতিপালকসকল পরিস্থিতির সব রকম চাহিদা যিনি মিটিয়ে থাকেনদুনিয়া কিংবা আখেরাতের কোনো প্রয়োজনের কথা তাঁকে বলতে হলে এ শব্দটির আবেদনই সর্বাধিক। সহজে বললেআপনিই যেহেতু আমাদের সব চাহিদা পূরণ করে আমাদের প্রতিপালন করেনআপনি আমাদের এ চাওয়াটিও পূর্ণ করে দিন।

পাক কালামের প্রথম আয়াতে আল্লাহ দয়াময় নিজের এ পরিচয়টিই তুলে ধরেছেন- তিনি রব্বুল আলামীনবিশ্বজগতের প্রতিপালক। 

Comments

    Leave a Reply

    Your email address will not be published. Required fields are marked *

    - আমি মুসলিমস ডে এর কমেন্টের নীতিমালার সাথে একমত হয়ে পোস্ট করছি

    সাম্প্রতিক পোস্ট সমূহ
    ক্যাটাগরি সমূহ
    ট্যাগ সমূহ
    error: অনুগ্রহ করে লেখাটি কপি করবেন না। লিংক শেয়ার করুন। ধন্যবাদ